By Sultan Shahin, Founder-Editor, New Age Islam
21 December 2019
ইউনাইটেড নেশনস্ মানবাধিকার কাউন্সিল, 16 তম সেশন, জেনেভা – 28 ফেব্রুয়ারী 25শে মার্চ 2011:
এজেন্ডা আইটেম 8 : ভিয়েনা বিবৃতির রূপায়ণ ও অনুসরণ এবং সাধারণ কার্যাবলীর ওপর আধারিত সাধারণ বিতর্ক
সুলতান সাহিনের মৌখিক বিবৃতি, এডিটর, নিউ এজ ইসলাম,
ইন্টারন্যাশনাল ক্লাব ফর পিস রিসার্চের পক্ষ থেকে বক্তৃতা
প্রেসিডেন্ট মহাশয়,
প্রায় দুই দশক আগে ভিয়েনা বিবৃতি এবং সেই সংক্রান্ত কার্যসূচী মূলত সবরকম মানবাধিকার নীতি উলঙ্ঘনের দূরীকরণের উদ্দেশ্যে গৃহীত হলেও বাস্তবে আমরা কিছু কিছু ক্ষেত্রে তার ক্রম অবনতিই দেখতে পাই।আর্টিকল 15 তে জেনোফোবিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করা কথা বলা হয়েছে এবং আর্টিকল 19 এ সরকারের পক্ষ থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার দিকটি সুরক্ষিত করার কথা বলা হয়েছে। জেনোফোবিয়া, মূলত ইসলামোফোবিয়ার একটি রূপ যা কয়েকটি ইউরোপিয়ান দেশগুলিতে মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে এবং কিছু মুসলিম প্রধান দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার উলঙ্ঘনের দিকটি ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে তুলছে।
পেট্রোডলার ইসলামগোষ্ঠী বিশ্বব্যাপী মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ইসলাম সর্বোত্তমতার বিষ নিযুক্ত করে চলেছে। মধ্যম ইসলাম অধ্যুষিত দেশগুলি যেমন ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া বর্তমানে এই ভাইরাসে আক্রান্ত । তবে সবথেকে খারাপ রূপটি আমরা দেখতে পাই মুসলিম নিউক্লিয়ার পাওয়ার সম্পন্ন দেশ পাকিস্তানে। জিহাদী বাহিনীর বিরদ্ধাচারণ করলেই সুরক্ষা বাহিনীর সদস্য সহ এই জিহাদী বাহিনী সাধারণ মানুষদের ধরে আনছে ও হত্যা করছে ।সমগ্র দেশ এই হিংসার সমুদ্রে নিমজ্জিত হয়ে গেলেও ইসলামের যে এই হত্যালীলা তা সাধারণ জনসমাজ, মিডিয়া অথবা পার্লামেন্টের জনপ্রতিনিধি কেউই তার প্রতিরোধ করার সাহস পাচ্ছে না। পাকিস্তানকে দখল করার যে তালিবানি লক্ষ তা অনেকটাই সুরক্ষা কৌশল এবং সেই সমস্ত এলাকার দেশগুলির থেকে মদত পাচ্ছে। এই লক্ষ্যমাত্রাটি পাগলামি সমপর্যায়ের হলেও তা বিগত 20 শতকের ইউরোপের নাজি এবং ফ্যাসিস্টদের মতো নয়।
পাকিস্তান এবং অন্যান্য অঞ্চলের মুসলিমদের বুঝতে হবে যে বিশ্বব্যাপী মুসলিমবাদী আবেগময় বিষয়গুলি মুসলিম জনসমাজকে অযৌক্তিক ও অচিন্তিত ভাবধারায় প্রভাবিত করবে। মুসলিম জনমানসকে করায়াত্ত করার জন্য কিছু ধর্মান্ধ মোল্লা সংবেদনশীল কিছু বিষয়কে জোরালো করে তুলে ধরছে যেমন অন্য ধর্মাবলম্বী মানুষদের নবী মহম্মদের অথবা তাদের পবিত্র কোরানের অবমাননা করা ।এই ধরণের ধর্মনিন্দা পাকিস্তান এমনকি অন্যান্য দেশে এত উচ্চমাত্রায় পৌঁচেছে যে মুসলিম জনসমাজকে তার কারণ খুঁজে দেখারও আর অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।বর্তমানে আসিয়া বেগমকে নিয়ে পাকিস্তানে যে বিতর্কের ঝড় উঠেছে, তাতে প্রমাণের কণামাত্র নেই বরঞ্চ পূর্বে যে মহিলার সঙ্গে তার বিরোধ ছিল শুধুমাত্র সেই অভিযোগই প্রকট হয়েছে।পাকিস্তানের বিপুল জনগোষ্ঠীর কেউই কিন্তু প্রমাণ চাইছেনও না ।আসিয়া বিবি কি করেছেন বা বলেছেন সে সম্পর্কেও তাদের কোনো জিজ্ঞাসা নেই। বরং মোল্লাগোষ্ঠী টেলিভাইশড মাধ্যমে বলছে যে কোরানে বলা হয়েছে যে ধর্মবিদ্বেষীদের শুধুমাত্র হত্যাই নয় তাদের সেই হত্যাকান্ড উপভোগ করা হবে।তারা এক অত্যন্ত বিষাদময় ভগবান ও প্রচারকের ভাবধারা তুলে ধরছে যারা অত্যাচার ও হত্যাকান্ডকে উপভোগ করেন এবং তাদের অনুগামীদেরও তা অনুসরণ করতে বলে থাকেন।তবে এরা এর পাশাপাশি এও বলে থাকে যে আল্লা হল দয়ার ও সহমর্মিতার প্রতিভূ। ধর্মযাজক হলেন দয়ার সাগর ।তবে মনে রাখবেন শুধুমাত্র মুসলিম সমাজ নয় সমগ্র্ মানবসমাজ এই বিষয়টির ব্যাপারে নিরুদ্বেগ।
যার ফলস্বরূপ সমাজে সবকিছুই অবাধ।তাই মননশীল মুসলিমই হল লক্ষ্যবস্তু। পাকিস্তানে সাম্প্রতিকতম ঘটনাটি হল তালিবানরা ধর্মনিন্দার বিষয়টিকে টেনে এনেছে এবং দেখাতে চাইছে যে মুসলিমদের মধ্যম সংখ্যক মানুষ হয় ধর্মনিন্দুক অথবা ধর্মনিন্দাকে সমর্থন করে। ফলে তারা তাদের একমাত্র খ্রীস্টান মন্ত্রী এবং পূর্ববর্তী পাক অধ্যুষিত পাঞ্জাবের প্রাক্তন ক্ষমতাশালী গভর্নরের সঙ্গে সহমত স্থাপন করতে পারছে না।
এরফলে অনেক হত্যাকান্ড হয়ে চলেছে। পাকিস্তানের এই কুখ্যাত ধর্মনিন্দার আইনের জন্য অনেক সংখ্যালঘু হিন্দু বা খ্রীস্টানদের কোনো কারণ ছাড়াই নিহত করা হতে পারে, এমনকি কোন অভিযোগে তাদের হত্যা করা হল তাও তাদের বলা নাও হতে পারে।আসিয়া বিবির ক্ষেত্রে ঠিক তাই ঘটেছিল। দুজন সরকারী নেতা আসিয়া বিবির প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ায় তাদের হত্যা করা হয়েছিল যেহেতু সেই নিরপরাধ মহিলার মৃত্যুদন্ডকে তারা হ্রাস করে তারা যাবজ্জজীবন কারাদন্ড করে দিতে চেয়েছিলেন।ধর্মনিন্দার সামান্যতম অভিযোগেই পাকিস্তানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের হত্যা করা হয়।কোনো বিচারকই প্রকৃত ন্যায় বিচার করার সুযোগ পান না যদিও বা করেন তাহলে তাকেই হয়তো বিচারকক্ষে হত্যা করে দিতে পারে।
প্রাসঙ্গিকতার খাতিরে আমরা মনে করে নিতে পারি কি পরিস্থিতির সাপেক্ষে এই আইনগুলি গঠিত হয়েছিল।1984 সালে আহমদী সম্প্রদায়ের লোকেরা মুসলিম বলে দাবী করলেই তদানীন্তন মিলিটারি শাসক জেনারেল জিয়াল-উল-হক সেটাকে ফৌজদারী অপরাধ হিসাবে চিহ্নিত করেন। দুবছর পরে তিনি ধর্মযাজক মহম্মদের বিরুদ্ধে ধর্মনিন্দার শাস্তিস্বরূপ মৃত্যুদন্ডের আইন প্রণয়ণ করেন পাঁচ মিলিয়ন শক্তিশালী আহমাদী বাহিনী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিন্দু ও খ্রীস্টান্দের দোষী সাব্যস্ত করার জন্য এই নীতি প্রণয়ন করেন।এই দুটি আইন কার্যকরী হয়েছিল।
এই সমস্যার গুরুত্ব বোঝার জন্য আমরা কিছু পরিসংখ্যানের সহায়তা নিতে পারি।1986 সাল থেকে অর্ধ সহস্র মানুষ যাদের এই আইনে অভিযুক্ত করা হয়েছে হয় তারা আহমাদী বা খ্রীস্টান সম্প্রদায়ভুক্ত যদিও তাদের মোট সংখ্যা পাঁচ শতাংশ পাকিস্তানি জনসংথ্যার বেশী নয়।সাধারণত দেখা যায় উচ্চ আদালত ধর্মনিন্দার এই ঘটনাগুলিকে মিথ্যা প্রমাণিত করে খারিজ করে দেয়, জমি ও পরিবার সংক্রান্ত সমস্যা থেকেই এই ধরণের ঝামেলাগুলি শুরু হয়।32জন লোককে আদালত মুক্ত করে দিলেও ইসলামী মৌলবাদীদের দ্বারা তাদের হত্যা করা হয়েছিল এমনকি দুজন বিচারকেরও একই পরিণতি হয়েছিল। তাই কারুর বিরুদ্ধে ধর্মনিন্দার অভিযোগ ওঠা মানেই তার পরিণতি হল মৃত্যুদন্ড।এই আইন রদ করার জন্য কোনো সরকারই সাহস দেখাতে পারেনি।এমনকি তারা হত্যাকারীদের সম্পূর্ণভাবে অভিযুক্ত করতে পারে নি।
প্রেসিডেন্ট মহাশয়,
স্বাধীনভাবে নিযুক্ত সদস্য দ্বারা গঠিত পাকিস্তানি পার্লামেন্টও অভিযুক্তদের দোষারোপ করতে পারে নি।তাই জনসমাজ এই ধর্মনিন্দার আইনের বিরু্দ্ধে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে এবং বিগত দশক ধরে সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানবাধিকারের চাহিদা এখন পিছনে পড়ে রয়েছে।এদের জোরালো সদস্যরা প্রকাশ্যেই বলছে যে তারা মৃত্যুদন্ডের অপেক্ষায় রয়েছে. দেশে এমন কোনো প্রতিষ্ঠান নেই যারা আপোস করে নি বা তারা ভীত নয়।সমস্ত রাজনৈতিক নেতারা জেহাদীদের তুষ্টিসাধন করে চলেছে।এই চরমপন্থীর প্রতিবাদের প্রচারে জনসমাজে মৃত্যুর পরোয়ানা ব্যানারগুলিকে সরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিলেন নিহত পাঞ্জাব গভর্নর জেনারেল সলমান তাসির ।তার মৃত্যুর পর ব্যানারগুলি সারা দেশ জুড়ে মাথা চাড়া দিয়ে উঠল। জনপ্রিয় প্রিন্ট মিডিয়া ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার একটি বড় অংশ জনসমাজের এই প্ররোচনায় সোচ্চার হয়ে উঠল।
বিভিন্ন ইসলামিক বিভাগগুলি যেমন ব্যারেলউইশ যারা একসময় মধ্যম ক্ষমতাশালী ছিল তারাও এখন প্রবল ক্ষমতাশালী হয়ে উঠল।গভর্নর সলমান তাসিরের হত্যাকারী এই গোষ্ঠীভুক্ত ছিল।তার জামাত আহেল সুন্নত পাকিস্তান (JASP) এর 500 ক্লেরিকস্ তাকে সমর্থন করেছিল।এই বিবৃতিটি ধর্মবিদ্বেষের একটি চূড়ান্ত নিরর্শন যেখানে ইসলামকে এক হত্যাকারী সম্প্রদায়রূপে চিহ্নিত করা হয়েছে যাদের ভগবান হিংসাত্মক ব্যক্তিত্বরূপে দেখানো হয়েছে যিনি নিরপরাধ মানুষদের হত্যাকে অনুপ্রাণিত করেন।যারা গভর্নরের অন্তেষ্ট্যিক্রিয়ায় অংশ গ্রহণ করেছিলেন তাদেরও মৃত্যুর পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল।ক্লেরিক্সের বিবৃতি অনুযায়ী পবিত্র গ্রন্থ সুন্নাহ্র মতে ধর্মযাজকের বিরুদ্ধাচারণের শাস্তিই হল মৃত্যুদন্ড।সুন্নাহ হল উলেমা কর্তৃক নির্মিত মুসলিম চিন্তাধারা ও ব্যাখ্যার একটি সম্মিলিতরূপ।এই সাহসী মানব (কোয়াদ্রি, দেহরক্ষাকারী)1400 বছর ধরে মুসলিম ভাবধারাকে বয়ে নিয়ে চলেছে এবং বিশ্বব্যাপী 1.5 বিলিয়ন মুসলিমদের মাথা গর্বে উঁচু করে দিয়েছে। মূল ধারার মধ্যমপন্থী মুসলিমদের কাছে এটি অত্যন্ত আক্রমণাত্মক যেহেতু পবিত্র কোরানে এর কোনো উল্লেখ নেই।ক্লেরিক্সদের মধ্যস্থতায় সেই ব্যক্তির হত্যাকারীকে নিরাপদে রাখা হচ্ছে ফলে সে একজন জনপ্রিয় হিরোতে পরিণত হয়েছে। পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী যিনি দেশের আইনরক্ষা করেন তিনি বলেছেন তিনিই ব্যক্তিগতভাবে ধর্মবিদ্বেষীকে হত্যা করবেন।এই ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য করা সত্ত্বেও তিনি তার পদে বহাল আছেন।
কিছু মুক্ত কন্ঠ গভর্নরের মৃত্যুর পর সো্চ্চার হলেও ক্যাবিনেট মিনিস্টার শাহবাজ ভাট্টির মৃত্যুর পর তাও ম্রিয়মাণ হয়ে পড়েছে।
মানবাধিকারের সমর্থক তাহিরা আবদুল্লাহ্ দেখিয়ে দিয়েছেন সালমান তাসিরের মৃত্যুর পর পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে 100 অথবা 200 র অধিক লোক জমায়েত করতে পারে নি অথচ এই ইসলামাবাদেই এক মিলিয়ন উচ্চ শিক্ষিত মানুষ বসবাস করেন। তারা করাচীতে শুধুমাত্র 500 মানুষকে জড়ো করতে পেরেছিলেন যা হল পাকিস্তানের বৃহত্তম শহর যেখানে 18 মিলিয়ন মানুষ বসবাস করেন।
প্রেসিডেন্ট মহাশয়
ইসলাম সম্প্রদায়ের মধ্যে মধ্যপন্থাঅবলম্বনকারীরা ক্রমশ তাদের ক্ষমতা হারাচ্ছে। 1974 সাল থেকে ক্রমশ পেট্রোডলারের অনুপ্রবেশ এই ধর্মের প্রকৃতিতে অনেক পরিবর্তন এনে দিয়েছে। মুসলিম সর্বোত্তমতা বর্তমানে শুধুমাত্র মুসলিম অধ্যুষিত দেশগুলিতেই নয় সংখ্যালঘু মুসলিম দেশগুলিতেও এদের আধিপত্য প্রভাব বিস্তার করেছে।এরফলে মিলিয়ন সংখ্যক মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ অপর ধর্মের মানুষদের অবমাননার চোখে দেখে শুরু করেছে।
পবিত্র কোরান এবং মুসলিম প্রথা অনুযায়ী, আমাদের মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের 124,000 ধর্মপ্রচারকদের ওপর আস্থা রাখা উচিত্ যারা সারা বিশ্বে এই পবিত্র ধর্মমত প্রচার করেছেন এবং তাদেরকে মহম্মদের সমতুল্য সম্মান প্রদান করা উচিত্। আমাদের পবিত্র গ্রন্থ [ আহল ই কিতাব ] এর আদর্শ অনুযায়ী এই ধর্মপ্রচারকদের অনুগামীদের সঙ্গে সম্মানপূর্ণ আচরণ করা উচিত্ এমনকি বৈবাহিক সম্পর্কও স্থাপন করা উচিত্।কিন্তু বাস্তবে এই আহল ই কিতাবএর ভাবধারা অর্থহীন হয়ে পড়েছে।তার পরিবর্তে বর্তমানে মুসলিম শিশুদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে [ মাদ্রাসা ] এছাড়া সরকারী স্কুলগুলিতে [পাকিস্তান এবং অন্যান্য মুসলিম দেশে] অন্যান্য ধর্মাবলম্বী মানুষদের ঘৃণার চোখে দেখার শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে।কিন্তু আমাদের মধ্যে থেকেও কেউ কেউ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়েছে।কিন্তু তথাকথিত ধর্মযাজকরা আমাদের বলে থাকেন যে অপর ধর্মের মানুষেরা আহল-ই-কিতাব হতে পারে তবে তারা কাফিরের (নাস্তিক, ইলফিদেলস্) সমতুল্য।তারা কখনোই দুটি মতে সমন্বয় সাধনের শিক্ষা দেয় না। যে কোনো সমাজেই অপর মতাবলম্বীকে অবজ্ঞার চোখে দেখলে সেই সমাজ এই বর্তমান মিশ্রসংস্কৃতির দুনিয়ায় শান্তিতে বসবাস করতে সক্ষম হবে না।
আমরা মুসলিমরা দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হলেও আমরা চাই যে এমন একটি মানব নির্মিত শারিয়া বানাতে যা হবে সম্পূর্ণরূপে ঐশ্বরিক বর্তমানে তা একেবারেই নয়।এমনকি যে সমস্ত দেশের মুসলিমরা সংখ্যালঘু তারাও শারিয়া আইনকে মেনে চলতে চায়। ভারত ছাড়া আর অন্য কোনো দেশ এটিকে অনুমোদন করে বা কোন সমাজ তা করতে দেয়। কোনো কোনো সমাজে এরফলে ইসলামফোবিয়ার সৃষ্টি হচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট মহাশয়,
প্রথম যখন ইসলামোফ্যাসিজম শব্দটি প্রয়োগ করা হল আমাদের মতো সাধারণ মানুষের কাছে তা অতিরঞ্জন মনে হয়েছিল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা নয়। ইসলামোফ্যাসিজম আরো ভয়ানক এবং ইসলামোফোবিয়ারই একটি রূপ যা ইউরোপের মতো দেশগুলিতে সংখ্যালঘু ধর্মাবলম্বীদের কাছে ত্রাসের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই ভয়ানক বিপর্যয়ের সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য ততপরতার সঙ্গে সমগ্র বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসতে হবে। মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ইসলাম নিয়ে ন্যায়সঙ্গত যে আন্দোলন তা আরো গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে। নবী মহম্মদের শেষ নৈতিক বক্তৃতাগুলি আমরা একবার দেখে নিই
“এই সমগ্র মানবজাতি হল আদম ও ইভের সন্তান (হাওয়া), অ-আরবীয়দের যেমন আরবীয়দের কোনো আধিপত্য থাকবে না তেমনই আরবীয়দের ওপর অ –আরবীয়দের আধিপত্য থাকবে না। সাদা চামড়ার যেমন কালো চামড়ার ওপর আধিপত্য থাকবে না তেমনই সাদা চামড়ার ওপর কালো চামড়ার আধিপত্য থাকবে না। শুধুমাত্র ভক্তি ও সুকর্ম ব্যতীত। তাই কখনোই নিজের প্রতি অবিচার করো না। মনে রাখবে একদিন তুমি আল্লার সাক্ষাত্ পাবে তখন তোমাকে তোমার কর্মের কৈফিয়ত দিতে হবে। তাই সাবধান হও আমি চলে যাওয়ার পর তোমরা ন্যায়ের পথ থেকে বিচ্যুত হয়ো না”।
এখানে এটা স্পষ্ট যে নবী অমুসলিমদের ওপর মুসলিমদের কোনো প্রকার আধিপত্যের কথা বলেন নি। তিনি শুধু একটা কথাই বলতে চেয়েছেন যে “ভক্তি ও সুর্কমই” হল মহানুভবতার মূল কথা। আমাদের মনে রাখতে হবে এবং বর্তমানে ক্রমবর্ধমান ইসলাম-সুপারম্যাসিজমের শক্তির সঙ্গে আমাদের লড়াই করতে হবে যাতে আমরা মিশ্র সংস্কৃতির দুনিয়ায় সমাজে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পারি যেখানে আমরা মূলধারার মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা মিলেমিশে বাস করতে পারি।
No comments:
Post a Comment